কম্বোডিয়া ভ্রমন কাহিনী
কম্বোডিয়া ভ্রমন, কম্বোডিয়া দক্ষিন-পূর্ব এশিয়ার অবস্থিত। এই দেশটি থাইল্যান্ড এবং ভিয়েতনাম এর মাঝে। কম্বোডিয়া এক সময় ফ্রান্সের অধিনে ছিল। খুব অল্পদিন আগে দেশটি স্বাধিন হয়। তাই দেশটি খুব উন্নত নয়। তবে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা এবং ট্রুরিজম এর দিক দিয়ে বাংলাদেশ থেকে অনেক এগিয়ে আছে।
ভিসা: বাংলাদেশে কম্বোডিয়ার কোন এম্বাসী না থাকায় ইন্ডিয়া, থাইল্যান্ড, মালশিয়া,সিংগাপুর থেকে স্টিকার ভিসা করাতে পারেন সেজন্য এম্বাসী ফি ২৫০০-৩০০০ টাকার মত খরচ হয়। এ ছাড়া ইভিসা দেশে বসেই নেয়া যায় ৩৬ ইউএস ডলার খরচ করে।বাংলাদেশীদের জন্য কম্বোডিয়া অনএরাইভ্যাল ভিসা চালু করছে তার জন্য ৩৫ ডলার খরচ করতে হবে।তাই কম্বোডিয়া যাওয়ার আগে ইভিসা করে যাওয়াটাই ভাল।
কিভাবে যাবেন : বাংলাদেশ থেকে কম্বোডিয়া ভ্রমন -এ সরাসরি কোন ফ্লাইট নাই তাই আপনাকে মালশিয়া ট্রানজিট করে কম্বোডিয়া যেতে হবে।ট্রানজিট ফ্লাইটের জন্য মালশিয়ার কোন ভিসা লাগেনা। তবে মালশিয়া এর কম্বোডিয়া এক সাথেই ঘুরে দেখাই ভাল,এতে করে খরচ অপ্লপরিমানে বারে।
আমার ফ্লাইট ছিল মালিন্দ এয়ারে মালশিয়া থেকে ১ঘন্টা ৩৫ মিনিটে চলে আসলাম কম্বোডিয়া।
ইমিগ্রেশন:বিমানে ওঠার সময় এরাইভ্যাল ফ্রমটি হাতে দিয়ে দেয় যাতে করে বিমান থেকে নেমেই সরাসরি ইমিগ্রেশন এর জন্য দারাতে পারি।যারা অনএরাইভ্যাল ভিসা নিতে চায় তাদের জন্য আলাদা লাইন।আর যাদের ভিসা আছে তাদের জন্য আলাদা লাইন করে ইমিগ্রেশন এর ব্যাবস্থা করেছে।আমার পাসপোর্ট দেখে আমার কাছে জানতে চাইলো আমার কেউ থাকে নাকি কম্বোডিয়া।আমি না বলায় কেন আসছি তা যানতে চাইলো, ঘুরতে আসছি শুনে রিটার্ন টিকেট দেখতে চাইলেন। দেখার পর ছবি তুলে আজ্ঞুলের ছাপ নিয়ে এন্ট্রি সিল দিয়ে পাসপোর্ট ফিরত দিল।
হোটেলঃ আমার হোটেল ছিল নেমপেন রিভার সাইড এলাকায়। নেমপন এয়ারপোর্ট থেকে বাসে ৫ ডলার এর একটা টিকেট কাটি তারপর ৫ ডলার দিয়ে একটা সিম নিয়ে বাসে উঠি।বাসে উঠার পর দেখি পুরা বাস ফাকা।শুধু ড্রাইভার আর এক স্কটল্যান্ডের এক ট্রুরিস্ট বসা। আমি বাসে উঠার পর বাস ছেড়ে দিল।এয়ারপোর্ট থেকে আমার হোটেলের দূরত্ব ১৩ কিমি। একবারের জন্য বাস না থামায়ে সম্পুর্ণ রাস্তা আমাদের দুইজন কে নিয়েই চলে আসলো।
ডলারঃ কম্বোডিয়ান কারেন্সির নাম রিয়াল ১ ডলার সমান ৪০৫০ রিয়াল।কিন্ত এখানে ডলার চলে তাই ডলারকে রিয়ালে কর্নভাট করা লাগে না।অনেক সময় ডলার দিলে চেঞ্জ হিসেবে রিয়াল দেয় তাতে অবাক হওয়ার কিছু নাই।তাই কম্বোডিয়া আসলো ১০০ ডলারের নোট না এনে ১,৫,১০,২০ ডলারের নোট আনাই ভাল ১০০ ডলার নোট আনলে দোকান থেকে ভাংগাতে ঝামেলা হয়। অনেকই কেনা কাটার পর ১০০ টাকার নোট দিলে খুচরা ডলার দিতে পারেনা। তাই বিড়ম্বনায় পরতে হয়।
কোথায় খাবেনঃ কম্বোডিয়া ভ্রমন -এ বাংলা খাবার পুরাই ভুলে যেতে হবে। আমি যে কয়দিন ছিলাম কোন বাংলা রেস্টুরেন্ট দেখি নাই। তবে যদি থেকে থাকে তা আমার চোখে পরে নাই। কম্বোডিন ফুড খাওয়া আমাদের জন্য একটু কস্টকর হয়ে যাবে। তবে কম্বোডিয়া অনেক ইন্ডিয়ান রেস্টুরেন্টের আছে। সেখানে ৬/১০ ডালারের বিনিময়ে এক বেলা খেতে পারবেন।
ঘুরে দেখার মত কি কি আছে: কম্বোডিয়া তে পশ্চিমা দেশের প্রর্যটক বেশি।বাংলাদেশ থেকে খুব বেশি টুরিস্ট এখানে আসে না।বাংলাদেশ বললে তারা চিনে,নাম শুনছে। কম্বোডিয়া ভ্রমন -এ রাজধানী নেমপেন সব চেয়ে আকর্শনীয় স্থান হচ্ছে River side.তাছাড়া National Museum, Royel palace,Wat phnom Historical side,Night Market,Central Market,Golden Tample,Monkey Tample,River Cruse, Taprom Tample, Killing Field,MACA,Al Saker Mosque,Silk Island. এছাড়াও Siem Reap এর Angkor Wat,Pub Street,Night Market,Floating Village.
Riverside :নেমপেন এর প্রধান আকর্শন হচ্ছে রিভার সাইড বিকেল থেকে অনেক রাত প্রর্যন্ত এখানে হাজারো প্রর্যটক ভির জমায়। সন্ধ্যার পর এর নদীর পারের লাইটিং এর কারনে এর সৌন্দয্য আরও বহু গুনে বেড়ে যায়।যা নিজের চোখে না দেখলে বিশ্বাস ই করতাম না।
National Museum: রিভার সাইডের River side Park এর সামনে থেকে মাত্র ৫/ ৬ মিনিট লাগে হেটে যেতে। সকাল ৭ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা প্রর্যন্ত খোলা থাকে। মিউজিয়ামে ঢোকার জন্য ৫ ডলারের টিকেট নিতে হবে।
Royel Palace:রিভার সাইড পার্ক থেকে রাস্তা পার হলেই Royel Palace.সকাল ৭ টা থেকে বিকাল ৪:৩০ প্রর্যন্ত ঢোকা যায়। রয়েল প্লেস এর এন্ট্রি ফি ১০ ডলার।এই প্লেসে কম্বোডিয়ার রাজা এখনো থাকেন তাই সর্বচ্চো সিকিউরিটির মাধ্যমে এটি ঘুরে দেখতে হয়।
Wat phnom Historical side: এটি একটি বৌধ্য মন্দির যা সমতল থেকে কিছুটা উপরে। এখানে আমি প্রথম Land Watch দেখি যা সত্যিই অসাধারন। দিনের থেকে রাতের বেলা লাইটিং এর কারনে মন্দির টি বেশি সুন্দর লাগে।
Night Market : নাইট মার্কেট বিকাল ৫ টা থেকে খোলা শুরু করে। রাত যত বেশি হয় এটি তত জমজমাট হতে থাকে।এই মার্কেটে আমার কাছে সবচেয়ে ভাললেগেছে খাবারে দোকান এবং তাদের পরিবেশন এর ধরন।
Central Market : নেমপেন এর সেন্ট্রাল মার্কেট কিছুটা ঢাকা নিউ মার্কেটের মত।এখানে যেতে হলে রিভাইভালিজম সাইট থেকে টুকটুকে ২/৩ ডলার নেয় তবে হেটে গেলে ১০/১৫ মিনিটের বেশি সময় লাগে না।
Golden Tample: গোল্ডেন টেম্পলটি আমার কাছে নেমপেন সবকটি বৌধ্য মন্দির থেকে আলাদা মনে হয়েছে।তাই মন্দিরের না গেলে অন্যান্য মন্দির এর সাথে প্রার্থক্য বুঝতে পারবেন না।
River Cruse:প্রতিদিন সন্ধ্যার আগে ১ঘন্টার জন্য River Cruse বের হয় Mekong নদীতে। Cruse এ ভাসতে ভাসতে সূর্য়াস্ত দেখতে পাবেন। এক ঘন্টা ক্রুজে সময় কাটাতে জনপ্রতি ৫ ডলার খরচ হয়।
Killing Field:১৯৭৫ থেকে ১৯৭৯ সালে কম্বোডিয়ার গৃহ যোদ্ধের সময় হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করেছে।তাদের যেখানে হত্যা করা হয় সেই জায়গাটা কিলিং ফিল্ড।এখানে যেতে টুকটুকে ভাড়া ১৫/২০ ডলার কিন্ত গ্রাব এ গেলে ভাড়া আসে ৮/১০ ডলার।
Al Serkal Masjid কম্বোডিয়া ভ্রমন : কম্বোডিয়াতে যতগুলো মসজিদ আছে তার মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর মসজিদ হলো আল শেরকাল মসজিদ। এই মসজিদটিতে Wat phnom থেকে হেটে গেলে ২০/২৫ মিনিট আর টুকটুকে করে গেলে ২/৩ ডলার ভাড়া লাগে।
Silk Island: সিল্ক আইল্যান্ড নেমপেনের একটি অন্যতম আকর্শনীয় স্থান।এখানে যেতে চাইলে আপনাকে রিভার সাইড Crouse এর টিকেট নিতে হবে হাফ ডে ১৫ ডলার আর লাঞ্চ করতে চাইলে ২০ ডলার নিবে টিকেটের দাম।
Siem Reap: নেমপেন থেকে siem Reap বাস আর প্লেন দুই ভাবেই যাওয়া যায়।প্লেনে গেলে ৫০/১০০ ডলার এর মত লাগে। এটা নির্ভর করে আপনি কবে টিকেট কাটবেন তার উপরে আর। যত আগে প্লেনের টিকেট কাটবেন প্রাইজ তত কম পরবে।আর বাসে গেলে ৮-২০ ডলার প্রর্যন্ত খরচ হয়।এটা নির্ভর করে বাসের উপর।সিটে বসে গেলে ৮/১০ ডলার খরচ হবে,আর যদি শুয়ে যেতে চান ১২/২০ ডলার খরচ হয় এটা বাসের কম্পানি উপর নির্ভর করে।siem Reap জন্য বাস রিভার সাইডেই পাওয়া যায়।এখানে অনেক গুলি ট্রাভেল এজেন্ট আছে যারা বাস টিকেট দিয়ে থাকে।সব চেয়ে ভাল হয় রাত ১১ টার বাসের টিকেট নিলে কারন সকাল ৬টার দিকে Siem Reap এ পৌছায়।এরপর হোটেলে গিয়ে ফ্রেস হয়ে চলে যেতে পারেন Angkor Wat.
Angkor Wat: কম্বোডিয়া ভ্রমন এ প্রধান আকর্শন হচ্ছে Angkor wat. এটি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ধর্মীয় স্থাপনা। পায়ে হেটে একদিনে এটি দেখে শেষ করা যায় না।একদিনে ঘুরে দেখতে চাইলে ১০/১৫ ডলার দিয়ে টুকটুক ভাড়া করে নিতে হবে এবং টুকটুক ড্রাইভার ই আপনার গাইড হিসেবে কাজ করবে। Angkor wat এর ঢোকার জন্য ১,৩ এবং ৭ দিনের টিকেটের ব্যবস্থা রয়েছে।১ দিনের জন্য ৩৭ ডলার ৩ দিনের জন্য ৬২ ডলার আর ৭ ডিনের জন্য ৭২ ডলার। তবে একজনের টিকেট দিয়ে আরেক জনের ঘুরে দেখা সম্ভব নয় কারন প্রতিটি টিকেটের সাথে ছবি লাগানো থাকে আর কয়েক জয়গায় চেক করে। টিকেট না পাওয়া গেলে ১০০ ডলারের জরিমানা করা হয়।
Floating Village : এটি সিয়াম রিপের ২য় আকর্শন। বছরের অর্ধেক সময় এইগ্রামেটি পানি বন্ধি থাকে।এইগ্রামটি ঘুরে দেখার জন্য ট্রাভেল এজেন্ট কাছ থেকে প্যাকেজ কিনে নেয়াই ভাল। কারন নিজে নিজে দেখতে গেলে খরচ অনেক বেশি পরে।প্যাকেজ এর দাম ১২/১৫ ডলার নেয় বিভিন্ন এজেন্ট।
Pub Street :সিয়াম রিপে রাতের লাইফ কে ইনজয় করার জন্য রয়েছে Pub Street. এখানে ইনজয় করার জন্য সব রকমের ব্যবস্থা আছে।তবে এই pub street এ বাচ্চাদের না নিয়ে যাওয়াটাই ভাল। কারন বাচ্চাদের নিয়ে গেলে একটু বিব্রতকর অবস্থায় পরতে হবে।Pub street এর পাশদিয়েই বয়ে গেছে একটি খাল,এটি পার হলেই Night Market.
বিদ্র: আপনি যেখানেই যান না কেন আপনি আপনার পরিবার ,সমাজ এবং দেশকে প্রতিনিধিত্ত করেন।তাই এমন কোন কাজ করবেন না যাতে আপনার,আপনার পরিবারের,সমাজের এবং দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়।
বাংলাদেশী পাসপোর্ট নিয়ে কম্বোডিয়া ভ্রমন প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব।
মূল লেখক: কাজী নিয়াজ মোর্শেদ
Regarding Visa Requirements & Application Process :
Traveltek BD
1301/1 East Monipur,Begum Rokeya Sarani,Mirpur-10
Email:visa@traveltekbd.com
Website: www.traveltekbd.com
Contact with Our Visa Consultant:
Mobile & WhatsApp Number
(+8801610-881122)
Traveltek BD only provide Visa logistics support with your documents. Visa grant is the distinct decision of embassy or consulate of the respective countries.