সড়ক পথে ভুটান ভ্রমন
ভুটান ভ্রমন

ভুটান ভ্রমন

সড়ক পথে ভুটান ভ্রমন এর নিজের অভিজ্ঞতা থেকে লিখা। ভুটান এশিয়ার অন্যতম শান্তিপ্রিয় একটি দেশ।ভৌগলিক দিক দিয়ে ভুটান বাংলাদেশের নিকটবর্তী একটি দেশ। বাংলাদেশ থেকে ভুটান যেতে আগে থেকে ভিসা করা লাগে না,বাংলাদেশী পাসপোর্ট হোল্ডার দের জন্য অনএরাইভ্যাল ভিসা তা আবার একদম ফ্রি। শুধু বিমানের টিকেট কেটে চলে যাবেন পারো এয়ারপোর্টে অনএরাইভ্যাল ভিসা দিয়ে দিবে।

কিন্ত যারা আল্প খরচে ভুটান দেখতে যেতে চান তাদের জন্য সবচেয়ে সহজ হচ্ছে ইন্ডিয়ান ট্রানজিট ভিসা নিয়ে ভুটান যাওয়া।বাংলাদেশ থেকে ১৫ দিনের ইন্ডিয়ার ট্রানজিট ভিসা পাওয়া যায়, এই ভিসায় আপনি ভুটান যাওয়ার সময় ৩দিন এবং আসার সময় ৩ দিন ইন্ডিয়া থাকতে পারবেন।

এবার আসা যাক ভিসা কি ভাবে করবেন? ভুটান ভ্রমন করতে যাওয়ায় জন্য আপনাকে ট্রানজিট ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। ভিসা আবেদন এর সময় চেংড়াবান্দা/জয়গাও এই পোর্ট সিলেক্ট করতে হবে। চেংড়াবান্দা হচ্ছে বাংলাদেশ ইন্ডিয়া আর জয়গাও হচ্ছে ইন্ডিয়া ভুটানের বর্ডার।

ভিসা আবেদন করতে আপনার দরকার হবে– ভেলিট পাসপোর্ট ৬ মাসের অধিক মেয়াদ,২*২ সাইজের এক কপি ছবি,পাসপোর্ট এর ফটোকপি, বিদ্যুৎ বিলের কপি,অফিসের NOC,ব্যাংক স্টেটম্যান্ট/ ডলার এন্ডোসমেন্ট ব্যাংক থেকে,ঢাকা চেংড়াবান্দা বাস টিকেট যাওয়া আসা দুইটাই আর NID ফটোকপি সহ ভিসা এপ্লিকেশন।

যেহেতু ভিসার মেয়াদ থাকে কম তাই সব কিছু গুছিয়ে নিয়ে ভিসার জন্য এপ্লাই করেন আপনাকে ট্রাভেল ডেট এর এক বা দুই দিন আগে পাসপোর্ট ফেরত দিবে, তাই এমনো হতে পারে তখন গুছানোর সময় পাবেন না।

যদি দার্জিলিং ঘুরে ভুটান ভ্রমন – এ যেতে চান তাহলে শ্যামলী বাস এর টিকেট নিতে পারেন, আর জদি আগে ভুটান যেতে চান তাহলে চেংড়াবান্দা যায় এমন যে কোন বাস এর টিকেট নিলেই হবে।ঢাকা থেকে সন্ধ্যায় বাস ছাড়ে সকাল ৫/৬ টায় চেংড়াবান্দা চলে যায়।তারপর
বর্ডারের ফরমালিটি শেষ করে ১০/১১ টার ভিতরে ইন্ডিয়ার অংশে চলে যেতে পারবেন, এখান থেকে সব ডলার বা টাকা ইন্ডিয়ান রুপিতে কনভার্ট করে নিবেন তাছাড়া একটা এয়ারটেল সিম কিনে নিবেন যা আপনাকে ফ্রুয়েন্টসলিং এ দারুন হেল্প করবে।ভুটানে ইন্ডিয়ান রুপি আর ভুটানে গুলট্রাম/ টাকার মান একই এবং রুপি সব যায়গায় চলে।

চেংড়াবান্দা থেকে জীপ ১৮০০/২০০০ রুপি আর মারুতি বা এম্ব্যাসোডর,অল্টো ১২০০/১৫০০ রুপি পরবে জয়গাও প্রর্জন্ত। দুপুর২/৩টার ভিতরে জয়গাও চলে যেতে পারবেন, ইন্ডিয়ার অংশে খাওয়া দাওয়া করে ইন্ডিয়ান ইমিগ্রেশন পার করে ভুটানে প্রবেশ করুন কারন ভুটানে খাবার খরচ ইন্ডিয়া থেকে অনেক বেশি।এবার ভুটান ইমিগ্রেশন এ আপনার পাসপোর্ট এর ফটোকপি আর এককপি ছবি সহ একটি ফ্রম পুরন করে ভিসা নিয়ে নিন। আপনাকে শুধু পারো আর থিম্পুর পারমিশন দিবে, অন্যকোন ডিস্টিকে যেতে চাইলে থিম্পু থেকে পারমিশন নিয়ে যেতে পারবেন, তার জন্য পাসপোর্ট এর ফটোকপি, এককপি ছবি আর ফ্রুয়েন্টসলিং থেকে দেয়া ভিসার ফটোকপি সহ একটা ফ্রম পুরন করে জমাদিতে হয়।

ফ্রুয়েন্টসলিং এ ভুটান ভ্রমন এর ইমিগ্রেশন শেষ করতে করতে ৪/৪:৩০ মত বাজতে পারে আপনি তখনই একটা টেক্সি নিয়ে থিম্পু অথবা পারো যেতে পারেন। এখান থেকে থিম্পু যেতে রাত১০/১১ টার মত বেজে যাবে তাই আমি বলব এই বিকেলে না গিয়ে রাতে ফ্রুয়েন্টসলিং থেকে যেতে কারন ফ্রুয়েন্টসলিং ও অনেক সুন্দর একটা জায়গা তার উপরে সারা রাত আর দিন জার্নি করে আসছেন। ফ্রুয়েন্টসলিং এ অনেক হোটেল আছে যারা বাংলা বলতে পারে এদের মধ্যে অনেকের দেখবেন বাংলাদেশে বাড়ি ছিল,এখান থেকে পাসপোর্ট এর কপি আর ছবি দিয়ে একটা ভুটানের টুরিস্ট সিম কিনে নিবেন,কারন আপনি বর্ডার থেকে যে সিম কিনেছেন তা থিম্পু আর পারোতে কাজ করবে না, আর রাতেই টেক্সির সাথে কথা বলে ঠিক করে নিবেন যেন সকাল ৬টার মধ্যে বের হয়ে যেতে পারেন।

ফ্রুয়েন্টসলিং থেকে আপনি থিম্পু, পারো,পুনাখা যে কয়দিন থাকবেন কি কি স্পষ্ট এ যাবেন তা বলে ডে হিসেবে টেক্সি ভাড়া করে নিবেন তাতে কস্ট অনেক কমে আসবে,২২০০ থেকে ৩৫০০ রুপি তে টেক্সি পাবেন, ভাড়া ডিপেন্ট করে সিজনের উপর,অফ সিজনে ভাড়া একটু কম থাকে।টেক্সি ড্রাইভারদের থাকা খাওয়া নিয়ে আপনার চিন্তা করতে হবে না ওদের টা ওরাই ম্যানেজ করে নেয়।

ফ্রুয়েন্টসলিং থেকে আপনি প্রথমে থিম্পু যেতে পারেন, থিম্পু পৌছাতে ২/২:৩০ মত বাজতে পারে হোটেলে চেক ইন করে ফ্রেস হয়ে বেরিয়ে পরুন সাইট সিইং এ,King’s Memorial Chorten, Buddha Dordenma Statue, Simtokha Dzong, National Takin Reserve, Tashiccho Dzong, Parliament House, King’s Palace দেখে নিতে পারেন,রাত ৭/৮টার ভিতরে প্রায় সকল কিছু বন্ধ হয়ে যায়।তাই ৮ টার ভিতর খাবার খেয়ে নিন, পরদিন সকাল বেলা আবার বেরিয়ে পরুন পুনাখার জন্য, তবে পুনাখা যাওয়ায় জন্য আপনাকে থিম্পুর ইমিগ্রেশন অফিস থেকে পারমিশন নিতে হয়, যা আগের দিন নিয়ে রাখতে পারেন বা সকাল বেলা নিয়েও যেতে পারেন তাদের অফিস থেকে সকাল১০ টার ভিতর পারমিশন পেয়ে যাবেন এই সময় টুকু থিম্পু ঘুরে দেখতে পারেন আর নাস্তা করে নিবেন।পুনাখা তে গিয়ে ওই দিন চলে আসা যায় তাই থিম্পুর হোটেল ছাড়ার দরকার নাই।

থিম্পু থেকে পুনাখা যাওয়ার পথে পরবেDochu La pass এখানে কিছু সময় কাটাতে পারেন ছবি তোলতে ভুলবেননা যেন,আর দো চুলা পাস এ বসে হিমালয়ের ভিউ দেখতে দেখতে এক কাপ কফি খেয়ে নিতে পারেন।এখানে বেশি সময় নস্ট না করে তারাতারি বেরিয়ে পরুন,পথের থেকে দুপুরের জন্য খাবার নিয়ে নিয়েন এবার সরাসরি চলে যাবেন পুনাখা সাসপেন্সসন ব্রীজের কাছে,এখানে বসেই লাঞ্চ সেরে নিতে পারেন।এর পর চলে আসতে পারেন মাচুপিচু নদীর মাঝে পুনাখা জং এবং রাফটিং পয়েন্ট।এখানে ৫/৬ হাজার রুপি খরচ হয় রাফটিং এর জন্য।তাছাড়া আসে পাসের কয়েকটা স্পট ঘুরে দেখতে পারেন যার নাম এখন মনে করতে পারছি না।
দেখা শেষ হলে বেরিয়ে পরুন আবার থিম্পুর জন্য পথে আবার কিছুটা সময় দো চুলা পাস এসময় কাটিয়ে নিতে পারেন।থিম্পু আসতে আসতে রাত তাই খেয়ে দেয়ে একটা ঘুম।পরের দিন সকাল বেলা পারোর জন্য রওনা দিয়ে দেন ১:৩০/২ ঘন্টা লাগবে পারো যেতে, নাস্তা পারোতেই করতে পারবেন। পারো দেখার জন্য রয়েছে
Chele La Pass, Airport Viewpoint, National Museum / TaDzong, Paro Doung,Tiger nest,

এগুলো দেখে পরের দিন সকালে ফ্রুয়েন্টসলিং এর জন্য বেরিয়ে পরুন আসার পথে নাস্তা করে নিবেন ১০:৩০/১১ টার মধ্যে আপনি ভুটান আর ইন্ডিয়ার ইমিগ্রেশন পার করে টেক্সি বা জীপ নিয়ে চেংড়াবান্দা চলে আসতে পারেন।

তবে আপনি চাইলে শিলিগুড়ি বা দার্জিলিং যেতে পারেন।দার্জিলিং যেতে চাইলে ইন্ডিয়ান ইমিগ্রেশন পার হয়ে যে কেউরে জিজ্ঞাসা করলে দেখায়ে দিবে দার্জিলিং এর জীপ কোথা থেকে ছাড়ে,আর শিলিগুড়ি যেতে চাইলে ইমিগ্রেশন পার হয়ে ডানে বামে না তাকিয়ে একটা অটো নিয়ে চলে যাবেন ট্রেন স্টেশন এবং ট্রেনে করে অল্প খরচে খুব সহজে চলে যাবেন শিলিগুড়ি।

ফ্রুয়েন্টসলিং, থিম্পু, পারো তে হোটেল ভাড়া ১০০০/১৫০০ রুপিতে পাবেন হোটেল নিয়ে কিছু বলার নাই কারন একেক জনের এক এক রকম পছন্দ, ভুটানে খাবারের খরচ ইন্ডিয়া থেকে বেশি।ভুটানের মানুষ খুবই লেল্পফুল।আমাদের পাঁচ দিনের ট্রিপে তিন জনের ১৫০০০ করে মোট ৪৫০০০ খরচ হয়েছিল।

 

 

বিদ্র: আপনি যেখানেই যান না কেন আপনি আপনার পরিবার ,সমাজ এবং দেশকে প্রতিনিধিত্ত করেন।তাই এমন কোন কাজ করবেন না যাতে আপনার,আপনার পরিবারের,সমাজের এবং দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়।

সড়ক পথে ভুটান ভ্রমন প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব।

মূল লেখক: কাজী নিয়াজ মোর্শেদ

Regarding Visa Requirements & Application Process :

Traveltek BD

1301/1 East Monipur,Begum Rokeya Sarani,Mirpur-10

Email:visa@traveltekbd.com

Website: www.traveltekbd.com

Contact with Our Visa Consultant:

Mobile & WhatsApp Number

(+8801610-881122)

Traveltek BD only provide Visa logistics support with your documents. Visa grant is the distinct decision of embassy or consulate of the respective countries.

Comments

Leave a Reply