বাসে চেংড়াবান্দা বর্ডার দিয়ে দার্জিলিং ভ্রমন
দার্জিলিং

দার্জিলিং ভ্রমন কাহিনী

বাংলাদেশ থেকে যারা ইন্ডিয়া ঘুরতে যান তাদের বড় একটা অংশ প্রথমে পছন্দ করেন দার্জিলিং।কারন খুব অল্প খরচে এই অপরুপ সৌন্দর্য্যের পাহাড়ি শহর টি দেখে আসা যায়।এই শহরে একবার গেলে অনেকেরই বার বার যেতে ইচ্ছে করে।দার্জিলিং এর সাথে মিরিক,কালিংপং,সান্দাকুফ এবং শিলিগুড়ির প্লান করতে পারেন।
ভিসা করার সময় চেংড়াবান্দা/ ফুলবাড়ি পোর্ট ব্যবহার করতে পারেন।তবে সময় ও খরচ বাচাতে চাইলে বুড়িমারি দিয়ে না গিয়ে বাংলাবান্দা যেতে বলবো।কারন বাংলাবান্দা থেকে শিলিগুড়ি যেতে মাত্র ৩০/৪০ মিনিট সময় লাগে আর চেংড়াবান্দা থেকে শিলিগুড়ি ২ ঘন্টার উপরে সময় লাগে।তাছাড়া চেংড়াবান্দার ইমিগ্রেশন পার এর সময় দুইদেশের মামা কাকা দের জন্য ৫০০/৬০০ টাকা খরচ করা লাগে।এই খরচ এখনো বাংলাবান্দায় দেয়া লাগে না।

ভিসা করার জন্য আপনাকে এখন আর ডেট নেয়া লাগে না সরাসরি যমুনা ফিউচার পার্কে ভিসা আবেদন জমা দিতে পারবেন।ভিসা আবেদন করতে আপনার দরকার হবে– ভেলিট পাসপোর্ট ৬ মাসের অধিক মেয়াদ,২*২ সাইজের এক কপি ছবি,পাসপোর্ট এর ফটোকপি, বিদ্যুৎ বিলের কপি,অফিসের NOC,ব্যাংক স্টেটম্যান্ট/ ডলার এন্ডোসমেন্ট ব্যাংক থেকে আর NID ফটোকপি সহ ভিসা এপ্লিকেশন।

ভিসা পাওয়ার পর আপনার ইচ্ছা মত প্লান করে কল্যানপুর বাসস্টান থেকে শ্যামলী পরিবহন যা শিলিগুড়ি যায় তবে বর্ডারের পর আরেক টা বাস,ভাড়া নিবে ১৫০০ টাকা তাছাড়া এস আর,মানিক,হানিফ পরিবহনের কিছু এসি এবং ননএসি বাস বুড়িমারি বর্ডার প্রর্জন্ত যায়।যার ভাড়া পরবে ৪০০-৮০০ টাকা। ঢাকা থেকে রাতে ছেড়ে সকাল ৬/৭ টায় আপনাকে বুড়িমারি নিয়ে যাবে,প্রত্যেক বাস কাউন্টারে রেস্ট নেয়ার বা ফ্রেস হয়ার জায়গা আছে পাসপোর্ট বাস কাউন্টারের সুপারভাইজার কে দিলে ওরা ট্রাভেল ট্যাক্স দিয়ে আপনার ইমিগ্রেশন এর জন্য সিরিয়াল দিয়ে দিবে এর জন্য প্রতি পাসপোর্ট এ ২০০/৩০০ টাকা করে নেয়,তাছাড়া এইসব কাজ আপনি নিজে নিজে করতে পারবেন।৮টা থেকে ইমিগ্রেশন এর কাজ শুরু হয় তারপূর্বে খাওয়া দাওয়া করে নিতে পারেন,এইখানে কয়েকটি ভাতের হোটেল আছে, বিশেষ করে বুড়ির হোটেল বেশ জনপ্রিয়।

দুইদেশের ইমিগ্রেশন এর কাজ শেষ করে গাড়িতে ওঠার আগে একটা সিম কিনে নিবেন আর ডলার বা টাকা চেঞ্জ করে নিয়েন।বর্ডারেই কয়েকটা চেঞ্জার আছে যাচাই বাচাই করে যারা ভাল রেট দেয় তাদের কাছ থেকে নিতে পারেন। দার্জিলিং এ ডলার রেট আকটু কম।শিলিগুড়ি থেকে দূপুরের খাবার খেয়ে ওইদিন ই যত তারাতারি সম্ভব বেরিয়ে পরুন দার্জিলিং এর জন্য। ৫/৬ জন এক সাথে হলে একটা জিপ ভাড়া করে নিতে পারেন ১২/১৫ শত রুপি নিবে আর তা নাহলে বিধান মার্কেট এর কাছে টেক্সিস্টান থেকে শেয়ার জিপ যায় ভাড়া নেয় ১২০/১৩০ রুপি।গাড়িতে ওঠার আগে যার যার পছন্দের খাবার বা অন্যান্য প্রয়োজনিয় যা লাগে কিনে নিতে পারেন,আর শিতের পোশাক হাতের কাছেই রাখবেন,যত উপরে যেতে থাকবেন ঠান্ডা তত বারতেই থাকবে।দার্জিলিং এ গিয়ে মল চত্তর এর কাছে আপনাকে নাবাবে এবং মল এর আসে পাসে একটা হোটেলে ডাবল বেড ১০০০/১২০০ মধ্যে পাবেন।কয়েকটা হোটেলে আবার বাংলাদেশী পাসপোর্ট দেখলে রুমদিতে চায় না।তাই হোটেল খোজার ঝামেলা এরাতে চাইলে অনলাইনে হোটেল বুকিং করে যেতে পারেন।

এবার হোটেলে ফ্রেস হয়ে মল চত্তরে বসে বসে ঠান্ডা উপভোগ করুন, তাছাড়া আসে পাসের পাহাড়ি এলাকা আর শপিং মল(বিগ বাজার) বা লোকাল মার্কেট ঘুরে দেখতে পারেন।এসময় আনেক গাড়ির ড্রাইভার আপনাকে টাইগার হিল যাওয়ার এবং সারাদিন সাইট সিং করার জন্য অফার করবে। গ্রুপের সদস্য বেশি হলে জিপ নিতে পারেন বা ৩/৪ জন হলে টেক্সি নিতে পারেন। রাত নয়টার পর ভাড়া করলে খরচ একটু কমেই পাবেন।জিপ সারাদিনের জন্য ১৫০০/১৭০০ রুপি আর টেক্সি ১০০০/১২০০ রুপি।

দার্জিলিং এ ঘুরে দেখার মত কিছু স্থানের মধ্যে
টাইগার হিল,বাতাসিয়া লুপ,জাপানিজ টেম্পল ও পিস প্যাগোডা,রক গার্ডেন,গংগামায়া লেক,চা বাগান,ক্যাবল কার,তেঞ্জিং রক,হিমালয় মাউন্টেন ইন্সটিটিউট এবং চিড়িয়াখানা।

টাইগার হিল যাওয়ায় জন্য আপনাকে সকাল ৪টায় ঘুম থেকে উঠতে হবে গাড়ির ড্রাইভার কে হোটেলের ঠিকানা দিয়ে রাখবেন, সকাল ৪:৩০ এর দিকে এসে আপনাদের নিয়ে বেরিয়ে পারবে টাইগার হিলের পথে সূর্য উদয়ের আগেই চলে যাবেন প্রথমে মনে হবে আপনি সবার আগে চলে এসেছেন কিন্ত সেখানে গিয়ে আপনার ধারনা পাল্টে যাবে, দেখবেন আপনার মত অসংখ্য টুরিস্ট চলে এসেছে সকালের সূর্য উদয়ের সাথে কাঞ্চন জঙ্গার অসাধারন ভিউ দেখার জন্য।তারপর টাইগার হিল থেকে ফেরার পথে বাতাসিয়া লুপ থেকে বাইনোকুলার এর সাহায্যে পুরো দার্জিলিং শহরের ভিউ দেখে চলে আসুন মল এরিয়া তে এসে সকালের নাস্তা খেয়ে বেরিয়ে পরুন রক গার্ডেনের জন্যে।আপনি তখন পাহাড় থেকে আসতে আসতে নিচের দিকে নামতে থাকবেন এক সময় মনে হবে সমতলে চলে আসছেন।রক গার্ডেন থেকে ফেরার পথে দেখে নিতে পারেন চিড়িয়াখানা, চা বাগান, তেঞ্জিং রক,ক্যাবল কার এর পর দুপুরের খাবার খেয়ে চলে যান জাপানিজ টেম্পল সেখানেই সূর্য অস্ত দেখে চলে আসুন মল এলাকার আসেপাশের একালা ঘুরে দেখতে পারেন আর ইচ্ছে না করলে মলের এরিয়াতে বসে আড্ডা দিতে দিতে রাতে খাবার খেয়ে হোটেলে গিয়ে ঘুমিয়ে পরতে পারেন।

পরের দিন সকালে একটু রিলাক্স মুডে ঘুম থেকে উঠে হোটেল রুমের জানালা দিয়ে সকালের শহরের ভিউ টা দেখে ফ্রেস হয়ে নাস্তা করে হিমালয় মাউন্টেন ইন্সটিটিউট থেকে ঘুরে আসতে পারেন তারপর একটা টেক্সি নিয়ে চলে যেতে পারেন ঘুম রেলস্টেশনে, যা পৃথিবীর সর্বচ্চো রেলস্টেশন। সেখান থেকে টয়ট্রেনে চরে শহরটি ভাল ভাবে উপভোগ করে পারবেন।সন্ধ্যায় মল এরিয়া বা আসে পাশের একালাতে সময় কাটাতে পারেন। মল এর পিছনের দিকে পাহাড়ের উপরে একটা মন্দির আছে এখন নাম মনে করতে পারছি না ইচ্ছে করলে সেটিও দেখে আসতে পারেন খুব ভাল লাগবে।ইন্ডিয়ায় এসে হলে বসে ছবি দেখবেন না তা কি করে হয় তাই বিগ বাজারের সাথে সিনেমা হল থেকে নাইট সো দেখে নিতে পারেন ভাগ্য সহায় থাকলে সদ্যমুক্তি পাওয়া নতুন সিনেমা দেখতে পারবেন।

এবার রাতেই টেক্সি বা জিপ ঠিক করে রাখতে পারেন মিরিক হয়ে শিলিগুড়ি যাওয়ার জন্য।কয়েকটা ড্রাইভারের সাথে কথা বলে ঠিক করে নিয়েন।।সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে বের হয়ে পরুন মিরিক এর জন্য, ইচ্ছে করলে সকালের নাস্তা রাস্তায় করতে পারেন তাছাড়া দার্জিলিং থেকে নাস্তা করে বের হতে পারেন। মিরিক যাওয়ার পথে বিশাল বিশাল ঝাউ বন যা দেখে মনে হবে অধিকাংশ ভুতের ছবি এই বাগানেই হয়েছিল। আরো দেখতে পাবেন অসংখ্য চা বাগান। আপনাদের কে ৯:৩০/১০ টার মধ্যে নিয়ে যাবে মিরিক লেক সেখানে ঘন্টা দুয়েক সময় কাটিয়ে আবার বেরিয়ে পরুন শিলিগুড়ির পথে।দুপুরের মধ্যেই চলে যাবেন শিলিগুড়ি। এইদিন যদি ?? ফিরে আসতে চান তাহলে শ্যামলী বাসের টিকেট কেটে নিতে পারেন আর ইচ্ছে করলে জিপ বা টেক্সি ভাড়া করে নিতে পারেন।আর যদি শপিং করার ইচ্ছা থাকে তাহলে এই রাত শিলিগুড়ি থাকতে পারেন। শপিং এর জন্য শিলিগুড়ি তে সব চেয়ে ভাল স্থান হচ্ছে বিধান মার্কেট এবং এই বিধান মার্কেটেই হোটেল নিতে পারেন যাতে ইচ্ছে করলেই হোটেলে যেতে আসতে পারেন।এই মার্কেটের প্রায় অধিকাংশ দোকানদার বাংলাদেশের ছিল।আপনি শপিং করার জন্য রাত আর পরের দিন ২টা প্রর্যন্ত সময় পাবেন।২টার দিকে আপনি চেংড়াবান্দার জন্য বেরিয়ে পরুন এবং ইন্ডিয়া ও বাংলাদেশের ইমিগ্রেশন এর সকল প্রকার ফর্মালিটি শেষ করে আপনার বাস কাউন্টারে ব্যাগ রেখে বুড়ির হোটেলে খাবার খেয়ে নিন দেখবেন মনে হচ্ছে অনেক দিন পর বাসার খাবার খাচ্ছেন।খাবারের পর আপনার বাসে উঠার পালা নির্দিস্ট সময় বাস ছাড়তে পারলে পরের দিন সকাল ৭/৮ টায় ঢাকায় চলে আসতে পারবেন।

কিছু কথা মনে রাখা জরুরী আমরা যেখানেই যাইনা কেন চেস্টা করি মানুষ কে জানাতে যে আমি বা আমরা এখানে আসছিলাম তাই রং বা খোদাই করে নিজেদের নাম ঠিকানা মোবাইল নাম্বার লিখে দিয়ে আসি।এতে করে সৌন্দর্য্য দেখতে গিয়ে স্থানটিকে নোংরা করে রেখে আসি।আর আমাদের সাথে নিয়ে যাওয়া ময়লা

আবর্জনা যেখানে সেখানে না ফেলে ব্যাগে করে নিয়ে এসে নির্দিস্ট স্থানে ফেলি।

 

বিদ্র: আপনি যেখানেই যান না কেন আপনি আপনার পরিবার ,সমাজ এবং দেশকে প্রতিনিধিত্ত করেন।তাই এমন কোন কাজ করবেন না যাতে আপনার,আপনার পরিবারের,সমাজের এবং দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়।

বাসে চেংড়াবান্দা বর্ডার দিয়ে দার্জিলিং ভ্রমন প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব।

মূল লেখক:কাজী নিয়াজ মোর্শেদ

Regarding Visa Requirements & Application Process :

Traveltek BD

1301/1 East Monipur,Begum Rokeya Sarani,Mirpur-10

Email:visa@traveltekbd.com

Website: www.traveltekbd.com

Contact with Our Visa Consultant:

Mobile & WhatsApp Number

(+8801610-881122)

Traveltek BD only provide Visa logistics support with your documents. Visa grant is the distinct decision of embassy or consulate of the respective countries.

Comments

Leave a Reply