নেপাল ভ্রমন কাহিনী
বাংলাদেশ থেকে খুব সহজেই অল্প খরচে নেপাল ভ্রমন করা যায়।আমি সব সময় বাজেট ট্যুর করে থাকি,তাই চেস্টা করি যতটা কম খরচে একটু ভালভাবে ঘুরে আসা যায়।নেপাল যেতে চাইলে লাগবে
১. বিমান টিকেট
২.বৈধ পাসপোর্ট মেয়াদ ৮ মাসের অধিক
৩.অফিসের NOC
নেপাল ভ্রমন যেতে যেহেতু আগে থেকে ভিসা করা লাগে না। বাংলাদেশী পাসপোর্ট অনরাইভাল ১৫ দিন থেকে ৯০ দিন প্রথম বারের জন্য ফ্রি তে ভিসা দিয়ে থাকে।একই বছরে ২য় বার যেতে চাইলে ২৫ ডলার ভিসা ফি দিতে হবে।অনরাইভ্যাল ভিসার জন্য পাসপোর্ট ফটোকপি আর পাসপোর্ট সাইজ ছবি জমা দেয়া লাগে। এছাড়াও সিম নিতে ছবি লাগে তাই কয়েক কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি ও পাসপোর্ট এর ফটকপি করে নিয়ে যাবেন।
বাংলাদেশ থেকে নেপালে প্রতিদিন বাংলাদেশ বিমান সকাল ১১টায় যায় আবার ২টা ফিরে আসে। রিজেন্ট এয়ার দুপুর ৩টায় যায় আবার ৫ টায় ফিরে আসে।ভাড়া দুইটাই প্রায় একই পরে, ১৪০০০–১৮০০০ টাকা রিটার্ন টিকেট।যত আগে বিমান টিকেট কিনবেন তত কমে পাওয়া যায় তাই বলে আবার ১৪০০০ এর নিচে নয় কিন্ত।
আমার কোন প্লান ছিলনা নেপাল যাওয়ার হঠাৎ করে এক রাতে লেলিন ভাই ফোন করে নেপাল যাওয়া কথা বললো আমিও সাথে সাথে রাজি হয়ে গেলাম। আর ফোন দিলাম টিকেট এর জন্য কারন আমরা যেদিন যাই তার ২দিন আগে প্লান করি যাওয়া। বাংলাদেশ বিমানের টিকেট নাই আছে রিজেন্ট এয়ার এর তাও ভাড়া একটু বেশি ১৬৮০০ টাকা করে পার পার্সন কি আর করার ইচ্ছা যখন হইছে যেতে তো হবেই কোন কিছু চিন্তা না করে কেটে ফেললাম টিকেট তারপর মাকে ফোন করে জানালাম নেপাল যাব টিকেট করে ফেলছি মা শুধু বললো সাবধানে যাইস আর কবে ফিরবি। মা তখন ঢাকায় ছিল না, কয়েক দিনের জন্য গ্রামে গেছে।
আমার ব্যাগ গুছানো ছিল তাই ফ্লাইটের দিন সকাল ১১টায় একটা উবার কল করে আমি আর লেলিন ভাই রওনা দিলাম এয়ারপোর্ট এর উদ্দেশ্যে ১২:৩০ গিয়ে পৌছাই এয়ারপোর্টে। তারপর রিজেন্ট এয়ার কাউন্টার এ সিট বুঝে নেই বামপাশে জানালার দিকে। যদি মেঘের খেলা দেখতে চান এর অসম্ভব সুন্দর ভিউ পেতে চান তাহলে বামপাশে জানালার সিট গুলি চেয়ে নিবেন।আমরা এয়ারপোর্টের আনুষ্ঠানিক কাজ শেষ করে বিমানে বসলাম নির্দস্ট সময়ে আমাদের ফ্লাইট ছাড়ল ১ঘন্টা ৪৫ মিনিট পর ত্রিভুবন এয়ারপোর্টে গিয়ে নামি। একটা ফ্রম পুরন করে অনরাইভাল ভিসার লাইনে দাড়াই ফ্রমটা পুরন করে যত তাড়াতাড়ি লাইনে দাড়ানো যায় তত আগে সব কাজ শেষ করে বের হতে পারবেন।১৫ দিনের ভিসা দিসে কোন কথা ছাডাই অনেক কে দেখলাম অনেক কিছু জিজ্ঞাসা করছে আমাকে কিছুই বলল না ভিসা দিয়ে দিল।
এয়ারপোর্ট থেকে পাসপোর্ট আর ছবি জমা দিয়ে একটা সিম নিলাম ফ্রি কিন্ত ১.৫ জিবি ডাটা প্যাক কিনে নিলাম।এয়ারপোর্টে কিছু ডলার ভাজ্ঞালাম রাস্তায় খরচ করার জন্য। সব ভাজ্ঞাই নাই এখানে রেট কম ছিল।
এবার যাত্রা থামেল : থামেল হচ্ছে নেপাল ভ্রমন কাঠমুন্ডুর মেইন ট্যুরিস্ট স্পট। এয়ারপোর্ট থেকে থামেল বাস ও ট্যাক্সি করে যাওয়া যায়। আমরা ৩৫০ রুপি (নেপালি) তে থামেল ছত্রপতি চৌকা ( চাররাস্তা) তে টেক্সি ঠিক করলাম সময় লাগলো ৪০/৪৫ মিনিট কোন জ্যাম ছিল না।এবার হোটেল খোজার পালা কয়েকটা হোটেল দেখে Hotel Budger Home ১০০০ রুপি ডাবল বেড নন এসি নেই। থামেল ট্যুরিস্ট এরিয়া তাই এখানে হোটেল ভাড়া একটু বেশি। মেইন থামেলে খাওয়া খরচ ও বেশি। তাই আমরা ছত্রপতি চৌকা তে একটা ইন্ডিয়ান হোটেল আছে এখানে খাই বাংলা খাবার পাওয়া যেত এই হোটেলে। অই রাতে আমরা থামেল টা ঘুরে দেখি। পরদিন কাঠমুন্ডু থেকে আমাদের যাত্রা পোখরা।
পোখরা: থামেল থেকে একটু হেটে গেলেই পোখরা যাওয়ার বাস। সকাল বেলা গিয়ে পছন্দ করে বাসের টিকেট কেটে নিতে পারবেন অনেকেই হোটেল থেকে আগে কেটে নেয় এইটা কোন দরকার নাই।পোখরা যাওয়ার বাস ভাড়া ৬০০–১৫০০ রুপি পরে সবগুলি এসি ট্যুরিস্ট বাস।আপনি ইচ্ছা করলে কাঠমুন্ডু থেকে পোখরা ফ্লাইট এ যেতে পারবেন।থামেল থেকে পোখরা যেতে ৭/৮ ঘন্টার বাস জার্নি, এতে টেনশন করার কিছু নেই বেশ কয়েক বার ব্রেক দেয় খাওয়ার এবং প্রাকৃতিক কাজ সারার জন্য।তবে ভাল ভিউ পেতে বাসের টিকেট কাটার সময় রিভার সাইডের সিট দিতে বলবেন,তা না হলে পুরা বাস জার্নি বোর হতে পারেন।তাছাড়া আপনি যদি রাফটিং করতে চান তাহলে থামেল থেকে বুকিং করে নিন,তখন আর আলাদা করে পোখরা যাওয়ার বাস টিকেট কাটা দরকার নেই।রাফটিং কনফার্ম করার সময় বলতে হবে পোখারা যাব।তখন রাফটিং শেষে তারা পোখরার বাসে উঠায়ে দিবে।কারন যে স্থানে রাফটিং করে তা থামেল আর পোখরা যাওয়ার রাস্থায়।তাই থামেল থেকে পোখরা বা পোখরা থেকে থামেল যাওয়ার পথেই রাফটিং করা উচিত। এবার আসি পোখরাতে কই থাকবেন।বেশিরভাগ ট্যুরিস্ট লেকসাইড থাকে এখানে অসংখ্য হোটেল আছে। আমরা ছিলাম Hotel Angel ৯০০ রুপি পার নাইট।লেকসাইডে অসংখ্য রেস্টুরেন্টে রয়েছে যেখানে লাঞ্চ বা ডিনার করতে পারবেন।পোখরা তে আপনি প্যারাগ্লাইডিং,বাঞ্জি জাম্প,আল্ট্রা লাইট ফ্লাইট, ১/৩/৭ দিনের জন্য ট্রাকিং এ বের হতে পারবেন।এছাড়া সকাল বেলা সরনকোট থেকে সূর্য উদয়ের অসাধারণ ভিউ দেখতে পারবেন।তাছাড়া লেক এ বোটরাইডিং করতে পারবেন। তাছড়া রাতের লেক সাইডে বারবি কিউ তো আছেই।
পোখরা তে সাইডসিং করার জন্য আপনি হোটেল রিসিভশন বা বিভিন্ন ট্যুর অপারেটিং কম্পানি থেকে প্যাকেজ নিতে পারেন।তাছাড়া ইচ্ছা করলে আপনি সাইকেল ভাড়া করে পোখরা ঘুরে দেখতে পারেন।আমরা ২জন ছিলাম তাই এক ট্যুর অপারেটর থেকে পোখরা সাইটসিং করার জন্য একটি প্যাকেজ নেই।প্যাকেজ ছিল ২জনের জন্য ১৫০০০ রুপি।
প্যাকেজ মধ্যে ছিল প্যারাগ্লাইডিং যা ৬৫০০/৮০০০ রুপি নিয়ে থাকে বিভিন্ন ফ্লাইট অপেরটার। কিন্ত আমরা অনেক কমে পেয়েছি মনে হয়।আমাদের ফুল প্যাকেজ ছিল Sarangkot sunrise যা দেখার জন্য ভোর হয়ার আগে ঘুম থেকে উঠে সূর্য উদয়ের স্থানে জেতে হয়। আমাদের গাড়ি এসে হোটেলের সামনে ৪:৩০ এর সময়।সূর্য উদয়ের অসাধারণ ভিউ দেখে আমরা চলে জাই Devis Fall,Gupteshwer Tample,Bindabansani Tample,Seti river, এগুলোর দেখতে দেখতে আমাদের ১১টা বাজে ঠিক তখনই আমাদের কাছে ফোন আসে প্যাকেজের সব চেয়ে আকর্শনিয় প্যারাগ্লাইডিং এর ফ্লাইট করে সেই সূর্য উদয় দেখার স্থান থেকে ১৫/২০ মিনিটের ফ্লাইট ল্যান্ড করে ফেওয়া লেকের শেষ প্রান্তে।তারপর তাদের গাড়িতে করে আমাদের হোটেলে দিয়ে যায়।ফ্রেশ হয়ে খাওয়া শেষ করতে না করতেই দেখি আমাদের ড্রাইভার এসে হাজির
Mahendra Cave,BAT Cave,OLD Bazar,International Mountain Museum দেখে আমাদেরকে নিয়ে যায় White Tample সূর্য অস্ত দেখতে।সেখান থেকে পোখরা শহরের অসাধারন ভিউ না দেখলে অনুভব করা যায় না।৭:৩০ টার দিকে আমাদের হোটেলে এসে দিয়ে জায়।রুমে ঢোকার আগেই রিসিফশন থেকে ডাক দেয় আমাদের একটু আগাতেই দেখি ২জনের নামে ২টা সিডি যাতে প্যারাগ্লাইডিং এর ছবি আর ভিডিও করা ছিল।এই রাতে আর বের হতে পারি নি বৃস্টির জন্য পরের দিন সকাল ৭:৩০ এর বাস কাঠমুন্ডু যাওয়ার, হোটেল থেকে বাস টিকেট আগেই কিনে নেই আর টেক্সি হোটেল ই ম্যানেজ করে দেয় ৩০০ রুপি বাসস্টান প্রর্যন্ত।
বিদ্র: আপনি যেখানেই যান না কেন আপনি আপনার পরিবার ,সমাজ এবং দেশকে প্রতিনিধিত্ত করেন।তাই এমন কোন কাজ করবেন না যাতে আপনার,আপনার পরিবারের,সমাজের এবং দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়।
বাংলাদেশ থেকে খুব সহজেই অল্প খরচে নেপাল ভ্রমন ( কাঠমুন্ডু ও পোখরা) প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব।
মূল লেখক: কাজী নিয়াজ মোর্শেদ
Regarding Visa Requirements & Application Process :
Traveltek BD
1301/1 East Monipur,Begum Rokeya Sarani,Mirpur-10
Email:visa@traveltekbd.com
Website: www.traveltekbd.com
Contact with Our Visa Consultant:
Mobile & WhatsApp Number
(+8801610-881122)
Traveltek BD only provide Visa logistics support with your documents. Visa grant is the distinct decision of embassy or consulate of the respective countries.